নাটিকার মূল চরিত্র :
মানব বাবু - সরকারি কর্মচারী, বয়স ৪২, বিবাহিত বিগত ১৩ বছর
বল্টু - মানব বাবুর পুত্র, ক্লাস ৫-এ পড়ে
ফটকা, মিছরি - ভাই - বোন, পাশের বস্তিতে থাকে, বল্টুর খেলার সঙ্গী, তাতে মানব বাবুর আপত্তি
দৃশ্য ১ :
মানব বাবুর বাড়ির বারান্দা। বুধবার, সন্ধ্যেবেলা ।
বল্টু : বাবা, এই সামনের মাসে,
কি নববর্ষ হবে ?
মানব বাবু : হ্যা সোনা হবে
বল্টু : নববর্ষ কাদের বাবা ?
তোমার ? নাকি আমার ?
মানব বাবু : নববর্ষ সবার সোনা
নববর্ষ সবার !
বল্টু : মায়ের, তোমার আমার ?
মানব বাবু : হ্যা সোনা সবার
বল্টু : আর মিছরির আর ফটকার ?
মানব বাবু (ঈষৎ থেমে) : হ্যা সোনা সবার
বল্টু : নব বর্ষে নতুন জুতো, নতুন জামা আমার ?
এবার ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে, আদর করতে করতে
মানব বাবু : হ্যা সোনা, সবই হবে তোমার
বল্টু : আর মিছরির আর ফটকার ?
----
দৃশ্য ২ :
রবিবার বিকেল । মানব বাবু নিউস চ্যানেল দেখছেন । বল্টুর টিভির ঘরে প্রবেশ ।
বল্টু : আচ্ছা বাবা বলতে পারো, শিরদাঁড়া কারে কয় ?
মানব বাবু কিছুক্ষণ নিরব । তারপর বললেন
মানব বাবু : যা থাকলে জীব-জন্তু সোজা হয়ে দাঁড়ায়,
যা না থাকলে তাদের মাথা নিচু হয়ে যায়
বল্টু : তোমার কি আছে বাবা ?
মানব বাবু : কি ?
বল্টু : ওই শিরদাঁড়া যারে কয় ?
মানব বাবু নিরুত্তর ।
বল্টু : তাই বুঝি মায়ের সামনে
তোমার মাথা নিচু হয়ে যায় ?
---
দৃশ্য ৩ :
শনিবার । দুপুর বেলা । ভাত খওয়া হয়েছে । মানব বাবু খাটে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন । এমন সময় ঘরে বল্টুর প্রবেশ
বল্টু : আচ্ছা বাবা, সিন্ডিকেট কারে কয় ?
মানব বাবু (ঘুম ঘুম চোখে ): ওই সবাই যাদের পায় ভয়,
রাজ্য জোড়া উন্নয়ন
যাদের দ্বারা হয় ।
বল্টু : আমিও তালে হয়েছি বাবা
মানব বাবু : কি ?
বল্টু : ওই সিন্ডিকেট..এখন ওই বেড়াল ছানা আমায় পায় ভয়
---
দৃশ্য ৪ :
বেস্পতিবার, রাতে খাবার পর, বারান্দাতে ।
বল্টু : আচ্ছা বাবা, কোথায় নাকি ব্রিজ ভেঙ্গে গেছে
তার নিচে কত লোক চাপা পড়ে আছে ?
মানব বাবু : সত্যি বাবা ! কি সাংঘাতিক কান্ড হয়ে গেছে !
বল্টু : এবার যদি মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে
তার নিচে তুমি আমি যাব সবাই মরে ?
মানব বাবু - সরকারি কর্মচারী, বয়স ৪২, বিবাহিত বিগত ১৩ বছর
বল্টু - মানব বাবুর পুত্র, ক্লাস ৫-এ পড়ে
ফটকা, মিছরি - ভাই - বোন, পাশের বস্তিতে থাকে, বল্টুর খেলার সঙ্গী, তাতে মানব বাবুর আপত্তি
দৃশ্য ১ :
মানব বাবুর বাড়ির বারান্দা। বুধবার, সন্ধ্যেবেলা ।
বল্টু : বাবা, এই সামনের মাসে,
কি নববর্ষ হবে ?
মানব বাবু : হ্যা সোনা হবে
বল্টু : নববর্ষ কাদের বাবা ?
তোমার ? নাকি আমার ?
মানব বাবু : নববর্ষ সবার সোনা
নববর্ষ সবার !
বল্টু : মায়ের, তোমার আমার ?
মানব বাবু : হ্যা সোনা সবার
বল্টু : আর মিছরির আর ফটকার ?
মানব বাবু (ঈষৎ থেমে) : হ্যা সোনা সবার
বল্টু : নব বর্ষে নতুন জুতো, নতুন জামা আমার ?
এবার ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে, আদর করতে করতে
মানব বাবু : হ্যা সোনা, সবই হবে তোমার
বল্টু : আর মিছরির আর ফটকার ?
----
দৃশ্য ২ :
রবিবার বিকেল । মানব বাবু নিউস চ্যানেল দেখছেন । বল্টুর টিভির ঘরে প্রবেশ ।
বল্টু : আচ্ছা বাবা বলতে পারো, শিরদাঁড়া কারে কয় ?
মানব বাবু কিছুক্ষণ নিরব । তারপর বললেন
মানব বাবু : যা থাকলে জীব-জন্তু সোজা হয়ে দাঁড়ায়,
যা না থাকলে তাদের মাথা নিচু হয়ে যায়
বল্টু : তোমার কি আছে বাবা ?
মানব বাবু : কি ?
বল্টু : ওই শিরদাঁড়া যারে কয় ?
মানব বাবু নিরুত্তর ।
বল্টু : তাই বুঝি মায়ের সামনে
তোমার মাথা নিচু হয়ে যায় ?
---
দৃশ্য ৩ :
শনিবার । দুপুর বেলা । ভাত খওয়া হয়েছে । মানব বাবু খাটে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন । এমন সময় ঘরে বল্টুর প্রবেশ
বল্টু : আচ্ছা বাবা, সিন্ডিকেট কারে কয় ?
মানব বাবু (ঘুম ঘুম চোখে ): ওই সবাই যাদের পায় ভয়,
যাদের দ্বারা হয় ।
বল্টু : আমিও তালে হয়েছি বাবা
মানব বাবু :
বল্টু : ওই সিন্ডিকেট..এখন ওই বেড়াল ছানা আমায় পায় ভয়
---
দৃশ্য ৪ :
বেস্পতিবার, রাতে খাবার পর, বারান্দাতে ।
বল্টু : আচ্ছা বাবা, কোথায় নাকি ব্রিজ ভেঙ্গে গেছে
তার নিচে কত লোক চাপা পড়ে আছে ?
মানব বাবু : সত্যি বাবা ! কি সাংঘাতিক কান্ড হয়ে গেছে !
বল্টু : এবার যদি মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে
তার নিচে তুমি আমি যাব সবাই মরে ?
----
দৃশ্য ৫ :
রোববার বিকেল । বল্টু পাড়ার মাঠে খেলতে গেছে । মানব বাবু কাগজ পড়ছেন । এমন সময় পাড়ার ছেলে লালুর হাঁফাতে হাঁফাতে প্রবেশ
লালু : মানব কাকু ! সর্বনাশ হয়ে গেছে !
মাঠের ধারে ঝিলের জলে বল্টু পড়ে গেছে !
মানব বাবুর মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে । লালু বলে চলে
লালু : কে যেন সঙ্গে সঙ্গে ঝিলে ঝাঁপ দেয়
জল থেকে তুলে তাকে
ডাক্তার খানায় নিয়ে যায় ।
সঙ্গে সঙ্গে মানব বাবু ও তাঁর স্ত্রীর লালুর সাথে ডাক্তার খানার উদ্দেশ্যে প্রস্থান ।
----
দৃশ্য ৬ :
ডাক্তার খানা । অনেক জনসমাগম । মানব বাবু ও তাঁর স্ত্রী ভিড় ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করলেন । বল্টু খাটে শুয়ে আছে । ভিজে চপচপে সারা গা । চোখ বন্ধ । দেখে মানব বাবু থমকে গেলেন । স্ত্রী "বল্টু..বল্টু" বলে কান্না শুরু করেছেন । কান্না শুনে গম্ভীর মুখে ডাক্তার বাবু এগিয়ে এলেন । মানব বাবুর উদ্দেশ্যে বললেন
ডাক্তার বাবু : এযাত্রা, বুঝলেন মশাই, পেয়ে গেলেন পার
সব ক্রেডিট হলো গিয়ে ওই ছেলেটার ।
বলে আঙ্গুল দিয়ে যেখানে তাক করলেন, সেখানে পাশের বস্তির ছেলে ফটকা দাঁড়িয়ে ছিল । আপাদ-মস্তক জলে ভেজা । এবার ফটকা বলল
দৃশ্য ৫ :
রোববার বিকেল । বল্টু পাড়ার মাঠে খেলতে গেছে । মানব বাবু কাগজ পড়ছেন । এমন সময় পাড়ার ছেলে লালুর হাঁফাতে হাঁফাতে প্রবেশ
লালু : মানব কাকু ! সর্বনাশ হয়ে গেছে !
মাঠের ধারে ঝিলের জলে বল্টু পড়ে গেছে !
মানব বাবুর মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে । লালু বলে চলে
লালু : কে যেন সঙ্গে সঙ্গে ঝিলে ঝাঁপ দেয়
জল থেকে তুলে তাকে
ডাক্তার খানায় নিয়ে যায় ।
সঙ্গে সঙ্গে মানব বাবু ও তাঁর স্ত্রীর লালুর সাথে ডাক্তার খানার উদ্দেশ্যে প্রস্থান ।
----
দৃশ্য ৬ :
ডাক্তার খানা । অনেক জনসমাগম । মানব বাবু ও তাঁর স্ত্রী ভিড় ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করলেন । বল্টু খাটে শুয়ে আছে । ভিজে চপচপে সারা গা । চোখ বন্ধ । দেখে মানব বাবু থমকে গেলেন । স্ত্রী "বল্টু..বল্টু" বলে কান্না শুরু করেছেন । কান্না শুনে গম্ভীর মুখে ডাক্তার বাবু এগিয়ে এলেন । মানব বাবুর উদ্দেশ্যে বললেন
ডাক্তার বাবু : এযাত্রা, বুঝলেন মশাই, পেয়ে গেলেন পার
সব ক্রেডিট হলো গিয়ে ওই ছেলেটার ।
বলে আঙ্গুল দিয়ে যেখানে তাক করলেন, সেখানে পাশের বস্তির ছেলে ফটকা দাঁড়িয়ে ছিল । আপাদ-মস্তক জলে ভেজা । এবার ফটকা বলল
ফটকা : দিলাম ঝাঁপ যখনই ওকে জলের মধ্যে দেখি
এমনি এমনি কি আর সাঁতার কাটা শিখি ?
ফটকার মুখে বীরের হাসি । মানব বাবু ও তাঁর স্ত্রী যেন কৃতজ্ঞতায় আত্মবিক্রিত হয়ে গেলেন এই বস্তির ছেলেটার কাছে । ওদিকে বল্টুর জ্ঞান ফিরেছে । 'বাবা' বলে ডাকতেই মানব বাবু ছেলের কাছে ছুটে গেলেন । বল্টুর মুখে মৃদু কথা
বল্টু : সত্যি সত্যি কি বাবা
আকাশ পড়ল ভেঙ্গে ?
চাঁদ তারা এলো নেমে
আকাশেরই সঙে ?
দৃশ্য ৭ :
মানব বাবুর বাড়ি । আজ নববর্ষ । মানব বাবু আজ বাড়িতে ছোটো করে অনুষ্ঠান করেছেন । এই বারই প্রথম । পাড়ার ছোটো ছোটো ছেলে মেয়েদেরকে আজ তাঁর বাড়িতে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে । পাশের বস্তি থেকে ফটকা, তার বোন মিছরি, আরও অনেক ছেলে মেয়ে এসেছে । যে ঘরে বাচ্চাদের হই হুল্লোর শোনা যাচ্ছিল, মানব বাবু সেই ঘরে ঢুকলেন । দেখলেন, বল্টু আজ নতুন পাঞ্জাবি পাজামা পরেছে । তার পাশে ফটকা আর মিছরি । ফটকাও আজ নতুন জামা প্যান্ট পরেছে । মিছরি একটা নতুন লাল টুকটুকে ফ্রক পরেছে । দুই ভাই বোন কোনদিন এমন ভালো পোশাক পরেনি, এমন ভালো ভালো খাবার পেট পুরে খায়নি । আজ বল্টুর মা সবাইকে যত্ন করে খাইয়েছেন -- পোলাও, মাংশ, লুচি, আলুর দম, আইস ক্রিম, মিষ্টি -- আরও কত কি ! মাঝে একবার স্বামীর সাথে চোখে চোখ পরে গেছিল । তখন মুখে ফুটেছিল স্বামীর প্রতি তৃপ্তির হাসি । বাবাকে দেখতে পেয়ে বল্টু ছুট্টে এসে জড়িয়ে ধরে । বলে
বল্টু : সত্যি বটে নব বর্ষ
তোমার আমার সবার !
মানব বাবু : তোমার আমার...আর
মিছরির আর ফটকার ..
আজ বাবা ছেলে একই আনন্দে সামিল । অনেক দিন পর মানব বাবু নিজের শিরদাঁড়াটা অনুভব করলেন । আর অনুভব করলেন মাথার ওপর অসীম আকাশটাকে ।
পুনশ্চ : ও, একটা কথা তো বলাই হয়নি । বল্টুর ভালো নাম বিবেক ।
এমনি এমনি কি আর সাঁতার কাটা শিখি ?
ফটকার মুখে বীরের হাসি । মানব বাবু ও তাঁর স্ত্রী যেন কৃতজ্ঞতায় আত্মবিক্রিত হয়ে গেলেন এই বস্তির ছেলেটার কাছে । ওদিকে বল্টুর জ্ঞান ফিরেছে । 'বাবা' বলে ডাকতেই মানব বাবু ছেলের কাছে ছুটে গেলেন । বল্টুর মুখে মৃদু কথা
বল্টু : সত্যি সত্যি কি বাবা
আকাশ পড়ল ভেঙ্গে ?
চাঁদ তারা এলো নেমে
আকাশেরই সঙে ?
দৃশ্য ৭ :
মানব বাবুর বাড়ি । আজ নববর্ষ । মানব বাবু আজ বাড়িতে ছোটো করে অনুষ্ঠান করেছেন । এই বারই প্রথম । পাড়ার ছোটো ছোটো ছেলে মেয়েদেরকে আজ তাঁর বাড়িতে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে । পাশের বস্তি থেকে ফটকা, তার বোন মিছরি, আরও অনেক ছেলে মেয়ে এসেছে । যে ঘরে বাচ্চাদের হই হুল্লোর শোনা যাচ্ছিল, মানব বাবু সেই ঘরে ঢুকলেন । দেখলেন, বল্টু আজ নতুন পাঞ্জাবি পাজামা পরেছে । তার পাশে ফটকা আর মিছরি । ফটকাও আজ নতুন জামা প্যান্ট পরেছে । মিছরি একটা নতুন লাল টুকটুকে ফ্রক পরেছে । দুই ভাই বোন কোনদিন এমন ভালো পোশাক পরেনি, এমন ভালো ভালো খাবার পেট পুরে খায়নি । আজ বল্টুর মা সবাইকে যত্ন করে খাইয়েছেন -- পোলাও, মাংশ, লুচি, আলুর দম, আইস ক্রিম, মিষ্টি -- আরও কত কি ! মাঝে একবার স্বামীর সাথে চোখে চোখ পরে গেছিল । তখন মুখে ফুটেছিল স্বামীর প্রতি তৃপ্তির হাসি । বাবাকে দেখতে পেয়ে বল্টু ছুট্টে এসে জড়িয়ে ধরে । বলে
বল্টু : সত্যি বটে নব বর্ষ
তোমার আমার সবার !
মানব বাবু : তোমার আমার...আর
মিছরির আর ফটকার ..
আজ বাবা ছেলে একই আনন্দে সামিল । অনেক দিন পর মানব বাবু নিজের শিরদাঁড়াটা অনুভব করলেন । আর অনুভব করলেন মাথার ওপর অসীম আকাশটাকে ।
পুনশ্চ : ও, একটা কথা তো বলাই হয়নি । বল্টুর ভালো নাম বিবেক ।
No comments:
Post a Comment