Saturday 25 January 2014

শুভ জন্মদিন : অয়নদা

(১)
আজ এ দিনে,
এক মুঠো আবীরের রঙ দিলাম তোমায়,
উড়িয়ে দিও আকাশে,
এক গোছা ফুলের সুবাস দিলাম তোমায়,
মিশিয়ে নিও বাতাসে ।
মুছে কালো মেঘের অন্ধকার,
আসুক নব আশার সূর্যোদয়।
জাগিয়ে আবার প্রাপ্তির নেশা,
আসুক নব কর্মের অঙ্গীকার ।

(২)

জন্মদিনে যদি জীবন নাহি মিলে,
তবে কিসের জনম, কিসের মরণ ?
যদি তব তেজ নাহি হবে অগ্নি,
যদি গগন-বিদারী হুঙ্কার ছাড়ি
নাহি কাঁপাইলে অবনী,
তবে কিসের তরে জনম লওয়া,
কিসের তরে জীবনের গান গাওয়া ?
কিসের গরবে গরবিনী হবে তব জননী ?


কিসের তরে এ তুচ্ছ প্রাণ ধারণ ?
যদি ক্ষুদ্র বীজ হয়ে পর্বত তলে পিষ্টে হয় মরণ ?
যদি মহা মহীরুহ হয়ে না ওঠো বাড়ি,
যদি অচেতনের শয্যা না ওঠো ছাড়ি,
তবে উদ্ধত স্ফুলিঙ্গ কেমনে জ্বলিবে দাবানল হয়ে,
কর্ম প্লাবন কেমনে আসিবে নব আনন্দের বার্তা লয়ে ?


ওঠো ওঠো হে কিরীটি,
ওঠো হে গান্ডীব-ধারী !
ওঠো হে নির্ভীক,
ওঠো আলোর পথচারী !
পুষ্পক রথে উঠে হে ধনঞ্জয়,
চূর্ণ করে সব ভয়,
হয়ো তুমি দুর্জয় !
তুনীর হতে লহ অগ্নি-বাণ,
ধনুকের ছিলায় দিও টান,
তব টঙ্কারধ্বনিতে ভূলোক দ্যুলোক হবে কম্পমান ।

দেখে তোমার অনল-জ্বলা উষ্ণীষ,
মৃত্যু তোমায় করবে কুর্নিশ;
চুরমার করে জয়দ্রথ-দুয়ার,
বিধির চক্রব্যূহ করে ছারখার;
ছিন্ন করে জড়-শৃঙ্খল,
উড়িয়ে দিয়ে নীল কুন্তল,
রচিবে তুমি জগত কানন ।

হাসি মুখে পান করে বাসকি-গরল,
ফোটাইবে হিংসামাঝে প্রেম-শতদল;
ক্ষীর-সমুদ্রে করিবে নিশ্চিন্ত শয়ন,
তবু ধরণী-বক্ষে রহিবে সদা তোমার চরণ ।


এসো আজি অগ্নি-বালক,
মাথায় লয়ে ময়ূর-পালক;
মৃত্যুঞ্জয় সুখে,
মোহন-বাঁশি মুখে,
হয়ে নিষ্ঠায় অবিচল,
লয়ে হৃদয়ে প্রাণের হিন্দল,
মন্দার-মালিকা কন্ঠে ধারণ করি,
অঞ্চলখানি মণি রত্নে ভরি,
করিও তুমি জগৎ পালন ।


ত্রিভুবনবাসী গাহিবে তোমারই জয়গান,
তব শীর 'পরে রহিবে বিজয়ের শিরস্ত্রাণ ।

এ শুভদিনে,
করি তোমায় সাদর আপ্যায়ন,
পত্রে পুস্পে রঙে রসে হোক আনন্দের বিচ্ছুরণ,
মোর তুচ্ছ নিবেদনটুকু তুমি করহ গ্রহণ ।

শুভ জন্মদিন ।।

শুভরাত্রি

আদি ব্রহ্মান্ডের অসীম শান্তি বুকে,
যেও তুমি উড়ে ঘুমের দেশে অনাবিল অমৃত সুখে,
যেও তুমি তারায় তারায় ফুলের মধু মেখে,
পরীর দল নাচবে তোমায় ঘিরে রঙ্গীন স্বপ্ন এঁকে ।
শুভরাত্রি । ।

Monday 6 January 2014

তুমি, কল্লোলিনী

যখন আমি চলি ?
আমার ছায়াও সঙ্গ ছেড়ে যায় ;
যখন চলো তুমি ?
চলে বসন্ত, চলে ফুলের সুরভী,
চলে চাঁদ তারা, চলে পাখিদের গান আত্মহারা,
চলে উত্সব, চলে দীপাবলী ।


যখন থামি আমি ?
পাস কাটিয়ে যায় সারা পৃথিবী,
দিবস যামিনী ;
আর যখন থামো তুমি ?
থামে আকাশ, থামে বাতাস,
থেমে যায় ঘড়ি,
থামে নিশ্বাস, থামে স্পন্দন,
তোমায় দেখে ও সুন্দরী ।


যখন হাসি আমি ?
আমার সাথে হাসে না কেউই,
শুধু বাঁকা ইশারায় মুখ ঘুরিয়ে নেয়, সবাই ;
যখন হাসো তুমি ?
হাসে স্বর্গ, হাসে মর্ত্য,
হাসে শহর, হাসে গ্রাম,
হাসে বনের পশু, হাসে কোলের শিশু,
হাসে পাহাড়, হাসে বনানী,
হাসে সাগর, হাসে মরুভূমি ।


তবে,
কখনো যদি কাঁদো তুমি,
পাশে দেখো রিক্ত শশান-ভূমি,
দেখো, তখন পাশে পাবে আমায়,
তোমার সব অশ্রুকণা শুঁষে নেবো বুকে,
তোমার সব দুঃখ আপন করে নিয়ে,
নিজের সব সুখ তোমায় বিলিয়ে দিয়ে,
হাসব আমল সুখে ।
যদি এতটুকু হাসি ফোটে আবার
তোমার ও মুখে,
সার্থক হবে আমার এ গান গাওয়া,
সার্থক হবে আমার জন্ম লওয়া ।

না পাওয়া

আবার ভেবেছিলাম বুঝি পেলাম তোমায়,
সেই গলির মোড়ে,
একলা নদীর তীরে,
সেই চায়ের দোকানের একচালাটার পাশে,
যেখানে এক ঝাঁক সাদা বক উড়ে যায় আকাশে,
যেখানে বয়ে যায় ভাগিরতি সময়ের ধারায় ।



সেই বকুল গাছের তলায়,
বুঝি দেখলাম তোমায়,
সেই চেনা রঙের শাড়ি পরে,
দাঁড়িয়ে আছো মুখ আড়াল করে,
ব্যাভিচারী এলো চুল গড়িয়ে পরেছে কাঁধ বেয়ে,
রিনিঝিনি রিনিঝিনি হাতের চুড়ি উঠছে গেয়ে ।

কিন্তু কাছে গিয়ে দেখি,
একি ??
সে তো তুমি নও,
সে তো অন্য কেউ !
সে অন্য কারো
হাতে হাত রেখে,
তার আদর অঙ্গে মেখে
করে যায় প্রণয় কাব্যি !
আমার সুখে নয়,
সে অন্যের সুখে সুখী,
উন্মুখ চন্দ্রমুখী ।

আবার আঘাত পেলাম !
দু হাত ভরে
সযত্নে রাখা
জুই, মালতি, চন্দ্রমল্লিকা,
টগর, বেল, চম্পা,  
সব ঝরে গেল নিস্তেজ হয়ে,
তাদের সুবাস মিশে গেলো হেলায়,
জীবনের এই পড়ন্ত বেলায়,
মাটির ধুলায় ।

এক বুক রিক্ততা নিয়ে আবার এগিয়ে চলি,
এই একলা পথে,
এক টুকরো আশ নিয়ে সাথে,
যদি আবার পাই তোমায়,
নির্মল শরতে,
হেমন্তে, বা বৈশাখে,
পথের ধারে, নদীর পাড়ে,
বা নির্জন সৈকতে ।




Friday 3 January 2014

আমার চোখে তুমি : মোনালি ঠাকুর (A Tribute)

প্রথম শুনেছি তোমায়,
শ্রীরামকৃষ্ণ মহিমায়,
শিশু কন্ঠে যবে উঠেছিলে গেয়ে,
"মূরলিতে তব হৃদয়ের কথা ভেসে আসে পবনে,
..সখা হে...."

ওগো আলোকিত এক ইন্দু,
বুঝেছি তুমি অপার গুণের সিন্ধু ।

লাস্যময়ী তুমি নাচো hip-hop নাচো salsa,
দেখি তোমায় মুগ্ধ নয়নে হারিয়ে যায় ভাষা ।

কৃষ্ণকান্তের উইল-এর ভ্রমর হয়ে উড়েছ তুমি ফুলে ফুলে,
হয়েছ তুমি সুরের প্রজাপতি সুরের পাখনা মেলে ।

এর পর Indian Idol, you singing Barbie doll,
সুরেলা হাঁসি মুখে হৃদয়ে এনেছো হিন্দোল ।

কুকনুর এর Lakshmi-এর হাত ধরে
ভাগ্যলক্ষ্মি  উঠুক হেসে,
অনন্ত করুনাধারা
বয়ে যাক ভালোবেসে ।

তখন,
যাবে না তোমায় ছোওয়া
যতই বল "touch me, touch me.."
"jhute mute khwab"
সব হবে সত্যি,
হবে তুমি স্বর্গের পরী,
সুরময়ী, সুন্দরী ।

শুধু মাটির পানে চেয়ো
হেসে ভূবন মোহিনী হাসি,
স্বর্গ থেকে পড়ুক ঝরে,
তোমার নামের পুষ্প রাশি রাশি ।

Thursday 2 January 2014

পথ

আবার হলো দেখা,
হলো কত কথা বলা,
এক সাথে পথ চলা ।
স্মৃতির আঙ্গিনায়
ফুটল কত কথার কলি
যার সুবাসে সুরভিত
রাজপথ, বনবীথি, গলি,
যেখানে পরেছিল আমাদের পদধূলি ।

কিন্তু সব কথা কি হয়েছিল বলা ?
সেই ব্যাকুল করে দেওয়া কথা ?
যা রেখেছ গোপনে,
মনের নিভৃত কোণে ?
বলেছিলে কি সেদিনে ?

সময় বয়ে যায়,
অক্লান্ত ধারায় ;
না ফোটা কুঁড়ি
ঝরে যায়
না জ্বলা আগুন
নিভে যায় ;
যদি চাঁদ-ঘন
পূর্নিমায়,
স্বপ্নে বোনা চাঁদোয়ায়
ফেলো গোপন অশ্রুজল ।

অচেতনে লালিত মনের সাধখানি,
মেলে দিও উজাড় করে,
চিরবসন্ত বুকে আঁকড়ে ধরে
থেকো আজীবন ।
সার্থক হবে পথ চলা,
সার্থক হবে কথা বলা,
যখন কলি গুলি
ফুল হয়ে ফুটবে
গন্ধে গন্ধে পুলকিত
হবে তোমার মন ।

আলেয়া

কে তুমি সুন্দরী ?
গান্ধর্বি, অপ্সরী, নাকি সুদূর দেশের পরী ?
কোন অছিলায় করলে আমার মন চুরি ।

তোমার চোখে দেখেছি কত মায়া,
স্বপ্ন-ঘেরা ছায়া।
ও কাজলে জমে থাকা কত পূর্নিমার নিশা,
ও বাঁকা হাসির নেশায় জাগে মাতাল হবার অভিলাষা,
ও রূপের আঁচলতলে লুটিয়ে দিলাম হিয়া ।
 

কিন্তু সব যদি হয় অবহেলা
মিছে মায়ার খেলা ?
মন হারানো আলেয়া ?
যদি মারীচের পেছনে ছুটে
দেখি তুমি নাই, তুমি নাই !
পড়ে রয় হাহাকার ?
যদি সত্যি হও তুমি
নেমে এস ছুঁয়ে বাস্তবের ভূমি,
বুক পেতে নেবো সব রূড়তা,
যদি
রেখে হাতে হাত,
করো এক সাথে পথ চলার অঙ্গীকার ।