Wednesday 21 January 2015

শুভ বিবাহ : দ্বৈপায়ন

বিয়ের বাঁধনে বাঁধিলো আজিকে
দ্বৈ  এবং শুক্তি ।
বহু দিবসের বিরহ হইতে
ঘটিল আজিকে মুক্তি !
বিয়ের বাঁধনে বাঁধিলো আজিকে
দ্বৈ  এবং শুক্তি ।


হৃদয় খেলার
মধুর লীলায়
মন মানেনা কোনই যুক্তি ;
দূর দূর হতে
ব্যাকুল হৃদয়ে
ব্যথার অভিব্যক্তি !
তাই,
বিয়ের বাঁধনে বাঁধিলো আজিকে
দ্বৈ  এবং শুক্তি ।


মন উচাটন
প্রাণ উচাটন
মরুভূমি সম প্রণয় কানন !
পাওয়া না পাওয়ার
করুন খেলায়
মলিন সহন শক্তি !
তাই,
বিয়ের বাঁধনে বাঁধিলো আজিকে
দ্বৈ  এবং শুক্তি !


মুখে বলি শুধু 
মানিয়ে নিয়েছি,
দিনে দিনে আরো
প্রবীন হয়েছি ।
লোক দেখানো
আবেগ প্রবাহ
হৃদয়ে লুকায়ে নিয়েছি !


তবু জানি ওগো
মনের গহনে
মরেছি একেলা 
মরমে মরমে ;
তুমি ছাড়া ওগো 
সুখ আসেনা
চিত্তে এক রত্তি !
তাই, 
মিলন ডোরে বাঁধিলো আজিকে
দ্বৈ  এবং শুক্তি !


তাই,
ভুবন ভোলানো 
আলোর আসরে
মিলেছে চার নয়ন ;
একাকার হয়ে
সুখের সাগরে
ভাসিছে দুই জীবন ;
সংসার ব্রতে 
থাকুক সদাই 
অশেষ অসীম ভক্তি ;
বিয়ের বাঁধনে বাঁধিলো আজিকে
দ্বৈ  এবং শুক্তি !

Wednesday 14 January 2015

বিয়ের prelude

দৃশ্য  :  পাতাল লোকের জটলা

দুই পাতালবাসী : নিন্দুক ১ এবং  নিন্দুক ২ এর  প্রবেশ ....

নিন্দুক ১ :

জানেন দাদা,
জবর খবর !!

এই সপ্তা খানেক পরে
আসছে ব্যাপক বদল !

নিন্দুক ২ :

বলেন কি  মশাই ?
এত  শিগগির ?

সবুজ  ঘাসের পাতার দেশে
ফুটবে গেড়ওয়া  কমল ?

নিন্দুক ১ :

আরে না না  মশাই !
সেসব নয় !
শুনুন  তবে,
গুনুন মনে
একটা করে দিন ;
রবিবারের রাত গড়ালেই
বাজবে বিয়ের বীণ !

নিন্দুক ২ :

বীণ কেন শুনি ?
একি মশাই সাপ নাচানোর খেলা ?
কিসের তালে  কিসের নাচন
বুঝবে বুঝি ঠেলা ?

নিন্দুক ১ :

এবার হবে বর-বাবাজির জীবন-মরণ খেল !
ছাদনা তলায়  নেড়ার মাথায়
ফাটবে গোটা বেল !

নিন্দুক ২ :

ওরে বাবা !
তারপর কি টোটাল ব্লাক-আউট ?
সর্ষে ফুল, বিষ ফোঁড়া..
লাইফ একেবারে হেল ?

নিন্দুক ১ :

কেন  মশাই ছট-ফটানি ?
তিষ্ঠ ক্ষণকাল !
বললাম বুঝি
সবুজ গিয়ে আসবে আবার লাল ??

আসল মজা হবে মশাই
প্রথম দিনের সক্কালেতে :

যখন ঢুলু ঢুলু চোখে
বর-বাবাজি
দুহাত মেলে
তুলবে দিব্য হাই ;
ঘুমের ঘোরে
আঁতকে উঠে
বলবে "হায় ! হায় !"

"আমার সাধের পালংকেতে
শুয়ে এটি কে ?"
বুঝবে তখন
চেতন পেয়ে,
"আরে দাদা !
এ যে আমারি
বিয়ে করা 'ইয়ে ' " !

"এই তো দাদা
সেদিন রাতে
ঘটা করে
করলাম একেই বিয়ে !
বাজলো উলু,
বাজলো সানাই,
মালা বদল হয়ে গেল
টোপর মাথায় দিয়ে "!

নিন্দুক ২ :

এগ্গে, একটা পোসনো  ছিল :
'ইয়ে ' মানে কি ইস্তিরি ?
গরম নাকি ঠান্ডা ?
মরম মাঝে ছেঁকা দেয়ার
অন্তবিহীন ফান্ডা ?

নিন্দুক ১ :

তখন সে কি করবে
মশাই ?
ভাববে বসে কি ?
সর্ষে ইলিশ
বেগুন পোড়া?
নাকি
পান্তা ভাতে ঘি ?

নিন্দুক ২  :

শেষের পাতের দই ?
নাকি
প্রথম পাতের শুক্ত ?
খাল কেটে এলো আস্ত কুমির ?
নাকি
প্রথম ফোটা মুক্ত?

নিন্দুক ১ :

ওপর থেকে ভাগ্য দেবী
হাসেন বাঁকা বাঁকা ;
টানা টানির বাজারেতে
টেঁক হবে যে ফাঁকা !

নিন্দুক ২ :

দু কান ধরে
ওঠা-বসার,
জ্বালামুখী শর্ত !
ত্রাহি ত্রাহি
কাঁপবে রবে
স্বর্গ থেকে মর্ত !

নিন্দুক ১ ও নিন্দুক ২ সম্মিলিত ভাবে  :

মরেছে ব্যাটা মরেছে ;
একেবারে মরেছে !
প্রেম-পিরিতির অক্টোপাসে
আষ্টে পিষ্টে ধরেছে !!

দুয়ে মিলে অট্টহাস্য, বিপুল করতালি..

এমন সময় ,
ত্রিলোক জুড়ে শংখ, ঘন্টা ধ্বনি ;

আকাশ থেকে দেবদূতের আবির্ভাব !

তীব্র তেজদৃষ্টি দুই নিন্দুকের পানে নিক্ষেপ ...
নিন্দুক-দ্বয় আতঙ্কিত !!

দেবদূত :

থামুন  তো  মশাই !
খুব তো ভারী
চেটাং চেটাং কথা !!
নতুন বিয়ের মুখে কেবল
মারতে হবে ঝেঁটা ?

বিয়ে মানেই কেবল বুঝি
হাঁড়ি-কাঠে গলা ?
নারী মানেই ঘর জ্বালানি
নিঠুর ছলা কলা ?

দেখবেন মশাই
অন্য রকম হবে
প্রনয় রসের খেল !
ফুটবে হাসি !
নেড়ার মুখে,
পরবে না কো বেল !

দুয়ে মিলে সুখ দুঃখ
করে নেবে ভাগ ,
খেলবে দুজন,
মুলতান মাঠের
সুলতান হয়ে,
দৃপ্ত সহবাগ !

খেপা বাউলের সুরে
দুজনে
নাচবে  তা  ধিন  ধিন !
হই হই করে
রম রম করে
কাটবে সুখের দিন !

নিন্দুক ১ ও  নিন্দুক ২  এর  পলায়ন
স্বর্গ  থেকে  নব দম্পতির ওপর পুষ্প বৃষ্টি !

সমাপ্ত ||

--

কৃপা দা

পুনশ্চ : পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলছি । এই ছোট ভাইয়ের সামনে গুরু দ্বায়িত্ব । তার মন হালকা করার উদ্দেশ্যেই এই কৌতুক কাব্য নাটিকা । এই ধরনের লেখায় আমার আজই হাতে খড়ি । কাজেই ভুল ত্রুটি অনিবার্য ! নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন । আসুন দ্বৈ-শুক্তির আনন্দময় পরিণয়ের জন্যে শুভেচ্ছা জানাই । 

Saturday 3 January 2015

পাওয়া


খুঁজেছি তোমায় একা একা,
তবু পাইনি তোমার দেখা ...


খুজেছি তোমায়
অমনিশার অন্ধকারে
খুজেছি তোমায়
রাধিকার অভিসারে
দাওনি তুমি দেখা !


খুজেছি তোমায়
তপ্ত রুক্ষ সাহারায়
খুজেছি অতলান্তিকের গভীরতায়;
খুজেছি  তোমায়
কলোরাডোর গহন গুহায়
আমাজোনের আদিম বিভীষিকায়
কিন্তু পাইনি তোমার দেখা !


খুজেছি তোমায়
দৃপ্ত বহ্নি শিখায়
পুড়েছি হাজার পতঙ্গের মত
অব্যক্ত যন্ত্রনায় !
তবু  পাইনি  ওগো  তোমায় ;


খুজেছি  তোমায়
হালকা শীতের আঁচে
রোদ ঝলমলে আরশি- ভাঙ্গা কাঁচে ;
খুজেছি  তোমায়
রাস্তার মোড়ে, অন্ধ গলিতে
শৈবাল ঘেরা  একলা  সৈকতে ..
তুমি  ছিলেনা  সেথায় ;


খুজেছি  কতবার
সেই  সাধের  শিউলি  তলায়
যেখানে  রোদ  খেলে  যেত  শৈশবের  মত ;
যেখানে  সন্ধে  নামলেই
জোনাকির  ঝিলমিল  জ্বলত  অনাবিল ;
যেখানে  জুইয়ের সুবাসে
রুপকথা  ঝরে  পরত  অঝরে ;
আকাশের  তারায়  বোনা সামিয়ানা থেকে ;
যেখানে  একা  একা  বসে  নেশা  লেগে  যেত ;
হারিয়ে  যেত  মন  দুর্গম  অজানায় ;
কত  আশা  ছিল
এবার  বুঝি  পাব  তোমায় !
তবু  হায় !
তুমি  এলেনা  সেখানেও !


আমি  জানতে  চেয়েছিলাম  জানো ?
বনের  পাখির  কাছে,
বেদুইন  বাতাসের  কাছে ;
চঞ্চল  ঝরনার  কাছে,
নদী, সাগর, মেঘেদের কাছে ;
তোমার  কথা |
বলেছিলাম  তাদের
আমার  মনের  গোপন  ব্যথা !
কিন্তু  তারা  কেউ
দিতে  পারেনি  ওগো
তোমার  ঠিকানা ..


এই  ভাবে  যখন
ক্লান্ত , তৃষ্ণার্থ  পথহারার  মত
ঘুরছিলাম  দুয়ারে  দুয়ারে ;
সব  আশায়  দুর্ভিক্ষ দেখছিলাম !
তখন হঠাত --
এক  মিষ্টি  ভোরে
রোদ  ঝিলমিল  শিশিরে
পেলাম  তোমার  দেখা  !


রঙিন  আলোর  বেশে
স্মিত  হাসি হেসে
এসেছিলে  তুমি ;
ধরে  আমার  হাত
আপন  নরম  হাতে ;
চেয়েছিলে  আমার  দিকে
এমন  করে ..
যেন  একফালি  চাঁদ
হেসেছিল  আমার  পানে ;
অজানা  আবেশে  বেঁধেছিলে  আমায়
কোন  গভীর, প্রবল  টানে !


আমি  অবাক  বিভোর  হয়ে
সুধিয়েছিলাম  তোমায়
"এতদিন  কোথায়  ছিলে  তুমি ?
কেন  পাইনি  তোমার  দেখা ?"


অরুন  আলোর  মত  হেসে  বলেছিলে সেদিন
"ওগো  আমার  সখা
ছিলাম আমি একান্ত  অবহেলায় ;
তোমার  মনের  কোণে ;
খোজনি  আমায়  সেখানে 
তাই  পাওনি  আমার  দেখা !"


সেই  মিষ্টি  তিরস্কারে
মনে  জ্বললো  আলোর  প্রদীপ
এলো  আমার  নেভা  সাঁজ বাতিতে
আলোর  রোশনাই ..
সেই  চরম  মধু  ক্ষণে
অমৃত  সুখের  গানে
আমি  পেলাম  তোমায় ..